আমরাও বড়লোক
-সাইফুল ইসলাম নিজামী
প্রভাষক, ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।
বউ ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে
করছি ঈদের বাজার,
প্রাণান্তকর চেষ্টা চলে
কিপটে স্বামী সাজার।
বেতন বোনাস সবতো নিলাম
বুকটা তবু কাঁপে,
মধ্যবিত্তের জন্মই যেন
আজন্ম এক পাপে ।
বড়লোকে কিনেই যাচ্ছে
দেখছেওনা দাম,
ওদের কথা ভেবে গায়ে
দিচ্ছে চিকন ঘাম ।
দামটা শুনে আৎকে উঠি
কামিজ কিংবা শাড়ী,
চাইলে কী আর দামী জিনিস
কিনতে আমি পারি?
গায়ে ভীষন জ্বালা ধরে
সেলসম্যানটার হাসি,
কাপড় তো নয় দামটা শুনে
বলি ভা’য়া আসি ।
বেছে বেছে দরাদরির
দোকানগুলো খুঁজি,
নিজেই জানি নিজের বাজেট
স্বল্প যে তার পুঁজি।
চাইবে যে দাম দোকানদারে
আমি বলব অর্ধ,
ফাঁকা পেলেই লুকিয়ে দেখি
লম্বা আমার ফর্দ ।
মুখটা দেখে ওরাও বোঝে
অল্প আমার আয়,
দামটা শুনে আমার পানে
আড়নয়নে চায় ।
কেউবা হেসে ঠোঁটটা বাঁকায়
কেউ বা হাসে মুচকে,
কেউবা দরের ধরন দেখে
মুখটারে দেয় কুঁচকে।
মত পাল্টে এবার ঢুকি
একদর যেথা লেখা,
দাম দেখে বেশ বুঝেই গেছি
আমি বড়ই একা ।
হঠাৎ বঁধু থমকে দাঁড়ায়
লাফিয়ে খানিক উঠে,
টাকার অংক দেখে বলি
মানাচ্ছেনা মোটে।
পছন্দ তার হলেই বলে
কেমন লাগছে বলো,
এই মার্কেটে হবেনা গো
অন্য কোথাও চলো ।
কম টাকাতে বাজার হবে
চাইছি এমন মার্কেট,
ওই টাকাতে সবার বাজার
এটাই ছিল টার্গেট।
ফুটপাথটাই বেছে নিলাম
দামটা খানিক কম,
এতক্ষনে ফেলতে পারছি
একটুখানি দম।
বিত্তের এহেন ফারাক দেখে
উথলে ওঠে শোক,
এই বাজারে ওদের চোখে
আমরাও বড়লোক ।
যতই বলুক এই ঈদে ভাই
ধনী গরীব সমান,
মিথ্যে প্রবোধ দিয়ে ওরা
পাপটা খানিক কমান।।