পাঞ্জাব বিশ্বাসঃ নিরবিচ্ছিন্নভাবে এলাকায় বসবাস করতে গিয়ে আমার মনে হচ্ছে, সামাজিক অবক্ষয় সহনীয় পর্যায়ে নেই। পারিবারিক নৈতিকতার যেসমস্ত দরবার প্রতিদিন আসে সেগুলো আলোচনা করতে রুচিতে বাধে। গত একমাসে বেশ কয়েকটি ঘটনার নিরসন দিতে হয়েছে এবং সাত লক্ষ টাকা আর্থিক দন্ড করেছি সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। যা অনভিপ্রেত!অপ্রত্যাশিত!
স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি অসম্মানজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বেত্রাঘাত তুলে দেয়ার কারণে স্কুলের শিক্ষক হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষার্থীদের শাসনের ক্ষমতা। অভিভাবকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা। কিছু কিছু শিক্ষকদের নৈতিকতার জায়গায়ও দুরন্ত পঁচন লক্ষণীয়।
শিক্ষাবোর্ডগুলোর ভেতরে পাশের হার বৃদ্ধির অসম প্রতিযোগিতায় শিক্ষার মান আশংকাজনক স্তরে পৌঁছে গেছে। খোলামেলা বলতে গেলে আমরা ডিগ্রীধারী একটা মুর্খ জাতিতে পরিনত হতে চলেছি।
সমাজের নেতৃত্বে চলে এসেছে এলাকার বাছাইকৃত কিছু মানুষ। যারা বিভিন্ন সরকারের সময় ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে সামাজিক সালিশ দরবারের নামে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছে ঐ শ্রেণীর লোকগুলো।
অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিদের চরিত্র শ্রদ্ধা কুড়ানোর সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যার প্রভাব সমাজের অন্ধকারকে উৎসাহিত করছে।
রাজনীতি একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি। দেশের সকল রাজনৈতিক দলের ভেতরের পঁচনে সংক্রামিত হচ্ছে দেশের সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে ঘুষ দুর্নীতির মহোৎসব যেকোনো সচেতন নাগরিকের জন্য অসস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতি এখন দেশপ্রেম নয়, অর্থনৈতিক বানিজ্যের উত্তম পথ হয়েছে। দেশের কল্যাণকামী সুস্থ ধারার রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই পঁচনের চোরাবালিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।
এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য রাষ্ট্রের শীর্ষবিন্দুতে সাহসী পদক্ষেপ প্রয়োজন। দুষ্টের দমন সৃষ্টের পালন নীতির অবলম্বনই কেবল আগামীতে একটি আলোকিত ধারা উপহার দিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ চরিত্রে পরিবর্তন প্রয়োজন।