সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণাঃ
বহুল প্রচারিত বঙ্গবাজার পত্রিকায় আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে আজই যোগাযোগ করুন,এছাড়াও আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা, দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, ভালো খবর, জন্মদিনের শুভেচ্ছা, নির্বাচনি প্রচারণা, হারানো সংবাদ, প্রাপ্তি সংবাদ, সংর্বধনা, আপনার সন্তানের লেখা কবিতা, ছড়া,গান প্রকাশ করতে যোগাযোগ করুন। ❤️দেশ সেরা পত্রিকা হতে পারে আপনার সহযাত্রী ❤️

কুড়িগ্রামে এক শিক্ষক দিয়েই চলছে ২শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান

  • বঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ প্রকাশিত বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে দূর্গম চরাঞ্চলের এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষিকা কে দিয়ে চলছে ২শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম।এতে ব্যাহত হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের লেখা পড়ার মান। ফলে প্রতিষ্ঠান থেকে ইতিমধ্যে ঝড়ে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে ৬টি পদের মধ্যে ৫টি পদই শূণ্য রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত দুই বছর থেকে একজন শিক্ষিকাকে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলছে। ধংসের পথে বিদ্যালয়টি। শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। অনেকেই আবার পড়ালেখা বাদ দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন সামনের শিক্ষক নিয়োগে বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে শিক্ষক দেয়া হবে। তবে আপাদত খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন। এদিকে যোগদানের কয়েকমাস পেড়িয়ে গেলোও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এখনো খোঁজ খবর নিতে যাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ উঠলে নানান ব্যস্ততার কারণে প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেননি বলে অযুহাত দেখান ওই শিক্ষা কর্মকর্তা। উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নে ১৯৯০ সালে স্থাপিত হয় দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। পরে ১৯৯৮ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে প্রতিষ্ঠানটি সরিয়ে নেয়া হয়ে ওই ইউনিয়নের ডাটিয়ার চর এলাকায়। পরে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ সালে জাতিয়করণ হলে এক সাথে ৫জন শিক্ষক দিয়ে ভালো ভাবে পাঠদান কার্যক্রম চলে আসছিলো । ২০১৯ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলো বলে জানান প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত শিক্ষক। গত ২ বছরে প্রতিষ্ঠান থেকে ৪জন শিক্ষক অবসরে গেলে প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার গতি একদম কমে যায়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ২শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে শিক্ষকের অভাবে প্রতিটি শ্রেনীর সকল বিষয়ে ক্লাস নিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রোজিনা খাতুনের। ফলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পাশের মাদ্রাসা সহ অন্য প্রতিষ্ঠানের চলে যাচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়েছে বলেও জানান এই শিক্ষিকা। ঠিকভাবে পাঠদান না হওয়ায় শ্রেনী কক্ষে শিক্ষার্থীদেও উপস্থিতিও কমে গেছে অনেকাংশে।
সরেজমিন দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, রোজিনা খাতুন নামে সহকারী শিক্ষিকা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন এবং তার সুবির্ধাতে সম্প্রতি বিনা পারিশ্রমিকে একজন খন্ডকালিন শিক্ষক নিয়েছেন তিনি। প্রধান শিক্ষক না থাকায় বর্তমানে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। ওই বিদ্যালয়ের ২শতাধিক শিক্ষার্থীদেও মধ্যে উপস্থিতির সংখ্যা অনেক কম। প্রথম শ্রেণীতে ৪৫ জনে মধ্যে ২৫ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৫০ জনের মধ্যে ১৮ জন, তৃতীয় শ্রেনীতে ৩০ জনের মধ্যে ১০ জন, চতুর্থ শ্রেনীতে ৩১জনের মধ্যে ১৩ জন এবং পঞ্চম শ্রেনীতে ৩১ জনের মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষক না থাকায় সব বিষয়ে ক্লাস হচ্ছে না তাই অনেকেই বিদ্যালয়ে আসে না।
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রোজিনা খাতুন বলেন, ‘গত ২ বছর যাবৎ শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ে একায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। ফলে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ৫টি শূণ্য এখনো শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে।’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘একায় ক্লাস নিতে সমস্যা হওয়ায় শিক্ষা অফিসে কথা বলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এক জন মহিলা কে খন্ডকালিন শিক্ষক হিসেবে নেয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন আহবায়ক হয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত স্কুলে আসে নাই খোঁজ খবর নিতে।’
খন্ডকালীন শিক্ষক মোছা. মমতাজ খাতুন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের একা স্কুল চালাতে কষ্ট হয়। যার ফলে আমি আপাদত বিনা পারিশ্রমিকে সময় দিচ্ছি যাতে প্রতিষ্ঠানটি ভালো ভাবে চলে।’
ওই এলাকার জহরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২ বছর যাবৎ একজন শিক্ষক দিয়ে এই স্কুল চলছে। যার কারণে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন খানে চলে যাচ্ছে তারা। এইভাবে কি একটা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে?’
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এখানে আর আগের মতো ক্লাস হয়না। যার ফলে ছেলে মেয়েরা আসতে চায়না। স্কুলে যদি পড়ালেখা না হয় তাহলে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষৎ অন্ধাকার হয়ে যাবে। তাই এই স্কুলে খুব দ্রুত শিক্ষক দেয়া হোক এটাই দাবী।’
জব্বার নামে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘স্কুলের কমিটিতে যদি এটিও থাকে তাহলে তিনি কি করেন, একদিনও স্কুল দেখতে আসলো না । প্রতিষ্ঠানটি ধংস হয়ে যাচ্ছে।’
এবিষয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেনে সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি এবং নানান ব্যস্ততার কারনে স্কুলে যেতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, জেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর আগে জানা ছিলো না । বিষয়টি নিয়ে ডিসি স্যারের সাথে কথা হয়েছে । স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আপাদত ২/৩জনকে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। তাদের বেতন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। যতদিন সরকারী ভাবে অন্য কোনো শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া হয়।
ইউএনও আরও বলেন, কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে সামনের নিয়োগে ওই বিদ্যালয়ের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।’
এই ধরনের আরও খবর

Advertising

আর্কাইভ

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন এখানে

জেলা প্রতিনিধি হতে যোগাযোগ করুন

সপ্তাহের সেরা ছবি

© All rights reserved © 2022 bongobazarpatrika.com
Theme Download From ThemesBazar.Com