কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলার ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী, উলিপুর, চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির বেশি অবনতি হওয়ায় বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
বন্যার কবলে ক্লাসরুম ও মাঠে পানি ওঠায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রাম-রমনা রুটে কিছু কিছু স্থানে রেললাইনের মাটি ধসে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর পাট, তিল, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়াসহ নষ্ট হচ্ছে মরিচ ক্ষেত।
রোববার (১৯ জুন) দুপুরে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম জানান, জেলায় মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় রৌমারীতে ৪৪টি এবং কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ১১টিসহ ৫৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানান, বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন শেষে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে নেওয়া হবে। যাতে বন্যা পূনর্বাসন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় ৯টি উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য ২৯৫ টন চাল, নগদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনা খাবার এক হাজার প্যাকেট, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ভাণ্ডারে ৮ লাখ টাকা এবং ৩০৮ টন চাল বর্তমানে মজুদ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন করে পাঁচশত টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।