ক্ষমতাসীন দল হিসাবে আওয়ামীলীগের তের বছরের অধিক সময় পর এসে একটি কথা বার বার মাথায় খটকা জাগায় দেশে এখন কে আওয়ামী লীগ আর কে আওয়ামী লীগ নয়? কেননা, চলনে,বলনে,কথনে, শাসনে ওনিত্য শ্লোগানে প্রায় সকলেই একই সূর সাধনা ওবন্দনায় ব্যাকুল ওব্যাস্ত সময় পার করছে।সুতরাং কোট পরিহিত এতসব অগুনিত মুজিব ভক্ত কুলের মধ্যে কে সহচর, কে অনুচর, কে মজদুর, কে বাহাদুর, আর কে গুপ্তচর তা চিহ্নিত করা আজ অনেকটাই দূরূহ ওদূঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুদীর্ঘ সাধনায় গড়া জনক মুজিবের রক্ত,শ্রম,ঘামে সাজানো বাগানের প্রস্ফুটিত পাঁপড়ি আর রসালো দৃষ্টিনন্দন
ফল আজ অনেকের কাছেই লোভনীয় রসনা বিলাসের অনন্য মাধ্যম। তাই এতসব মনোহারী ফুল পাঁপড়ি আর রসালো ফলের রসাস্বাদনের মোহে সঙ্গত কারণে ক্ষমতার এই তেরটি বছরে দলীয় বাগানের সাজানো অঙ্গনে ইঁদুর বাদুরের সীমাহীন উপদ্রব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
আবার তেলে ঝালে,নুনে ঝোলে, ফলে মূলে কব্জী ডুবিয়ে খেয়ে ধেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সেদিনের কৃষকায়,কৃষ্ণকায় দেহটাকে যারা মোটা তাজা করে রেসলিং প্লেয়ার,মুষ্টিযোদ্ধা কিংবা পালোয়ানের অবয়বে গড়ে নিয়েছে তাদের দেখলে আজ বিস্ময় জাগে। মনে মনে বলি আর জপি, ক্ষমতার কত গুন।কারন ক্ষমতা শুধু যে অর্থশালী প্রভাবশালী,বৃত্তশালী করে তা নয়, ইহা অনেককে মুষ্টিযোদ্ধা ও পালোয়ানও বানিয়ে দেয়।আকাশচুম্বী এই ক্ষমতার জেরে এদের অনেকে ভুলে যায় তাদের সামাজিক,রাজনৈতিক ওব্যক্তিগত অবস্হান।ভুলে যায় দায়িত্ববোধ ওক্ষমতার সীমারেখা।অবস্হানগত মর্যাদা সন্মানের কথা।
ফলশ্রুতিতে এরা শিক্ষকের গায়ে হাত তোলে।দলীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিকে লাঞ্চিত করে।মূলত এরাই একটি দল ওদলীয় সরকারের সকল অর্জন,উপার্জন, সুনাম,সুখ্যাতি,উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও কৃতিত্বকে তাদের এহেন অপকর্মের মাধ্যমে নিমিষেই ধূলিস্মাৎ করে দেয়।অথচ এদের এসব অপকর্মের দায় নিতে হয় দলকে এবং দলের অগুনিত তৃনমূল কর্মীকে।ক্ষমতার উষ্ণতায় দিশেহার কতিপয় নেতাদের বেপরোয়া আচরন একদিকে যেমন দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তেমনি কর্মীদের কে বিব্রত করে।
দলের প্রতি এদের দায়হীন, দরদহীন কর্মকান্ড দেখলে মনে প্রশ্ন জাগে আসলে এরা ছদ্মবেশী কিনা? কেননা ছদ্মবেশীরাই যুগে যুগে দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।বিভীষন রূপী এসব ঘাপটি মারাছদ্মবেশীরাই
এখন নানা কৌশলে দলের অভ্যন্তরে মহাজন সেজে বসে আছে কিনা?দলের সমুদয় অর্জনগুলোকে এরা সুপরিকল্পিতভাবে বা ইচ্ছেকৃতভাবে ধ্বংস করে দলকে বিতর্কিত করছে কিনা?
এদের আলামত কর্মকান্ড অচেনা লোকের মতো।দলীয় ঘরে এরূপ আচেনা লোকের চাটুকারিতা দেখলে বুঝে নিতে হয় যে এরা পুরো মাত্রায় শত্রু।
একইভাবে এখন দলের ভিতর ইঁদূুর বাদুরের উপদ্রব লক্ষনীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে। এরা সাজানো দলীয় বাগানের সুস্বাদু টক মিষ্টি রসালো ফলের মসৃন দেহটাকে নখরের তীব্র,তিক্ষ্ন আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত করে তুলছে।এরা ইদুর সেজে দিনে কাটে মূল, কান্ড, শিকড়।আর রাতে বাদুর সেজে নখরের আঁচড়ে বিক্ষত করে সখের সুন্দর মসৃন সুস্বাদু ফলমূল।এদের বাচ বিচার নেই।ভাল মন্দের ধার ধারে না।সুযোগ ফেলেই এরা দাঁত, নখ সমানেই ব্যবহার করে।এসব ইঁদুরের কাছে সম্পদের মহামূল্যবান দলিল আর আর বস্তাবন্দী পরিত্যাক্ত পুরাতন কাগজের মধ্যে কেন প্রার্থক্য নেই।এরা এদের সূক্ষ,তীক্ষ্ধারালো ওসূচালো দন্ত দিয়ে বিশ্বাস,ভরসা,ভালবাসা সম্পর্ক বন্ধনের সূতাটিও নিমিষেই কেটে দিতে দ্বিধাবোধ করে না।
ক্ষমতার পালা বদলের আভাস পেলে এর স্হান বদলায়।ফল মূল শেষ হলে এরা বাগান বদলায়।রাতারাতি রং রূপ বোল পাল্টে সুবিধাজনক নতুন অঙ্গনে বাসিন্দা সেজে যায়। মূলত এরাই সুবিধাবাদী, সুযোগ সন্ধানী, তোষামোদকারী, তৈলবাজ,ধান্ধাবাজ, চাটুকার।এদের নিজস্ব ওনির্দিষ্ট ঠিকানা নাই।ফল ফুলের রসালো বাগানই এদের ঠিকানা।
এরা বাগান কিংবা বাগান মালিকের ভাল মন্দের ধার ধারেনা। রসাস্বাদনই এদের মূল লক্ষ।
সুতরাং শ্রী সৌন্দর্য ও ফল মূল রক্ষায় অনাকাংখিত এতসব পোকা মাকড়,ইদুর বাদুরের উপদ্রব থেকে বাগান রক্ষায় সজাগ,সতর্ক ও যত্নশীল হওয়া ব্যাতীত এই মূহুর্তে অন্য কোন বিকল্প নাই। বিকল্প নেই চিহ্নত করার! কে প্রকৃত সহচর
আর কে গুপ্তচর।
ধন্যবাদ
ভি,পি মসলু।