সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
ঘোষণাঃ
বহুল প্রচারিত বঙ্গবাজার পত্রিকায় আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে আজই যোগাযোগ করুন,এছাড়াও আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা, দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, ভালো খবর, জন্মদিনের শুভেচ্ছা, নির্বাচনি প্রচারণা, হারানো সংবাদ, প্রাপ্তি সংবাদ, সংর্বধনা, আপনার সন্তানের লেখা কবিতা, ছড়া,গান প্রকাশ করতে যোগাযোগ করুন। ❤️দেশ সেরা পত্রিকা হতে পারে আপনার সহযাত্রী ❤️

ছোট গল্প – “বাবা তুমি বটবৃক্ষ” কলমে – রাজ

  • বঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ প্রকাশিত রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২
  • ১৮২ বার পড়া হয়েছে

ছোট গল্প – বাবা তুমি
বটবৃক্ষ
কলমে – রাজ
আমার এক বন্ধু আছে। তার নাম কমল।গত স্বরস্বতী পূজায় বাবার সাথে আমি মেলায় অনেক খেলনা ক্রয় করি । সেদিন আমার বন্ধু কমলকে ও তার বাবা তালপাতার বাঁশি, মাটির হাতি,মাটির ঘোড়া, মাটির হাড়ি পাতিল, মাটির ফলমূল অনেককিছু কিনে দিয়েছিল। কমলের বাবা ট্রাক চালক ছিলেন। যদিও কমলেরা গরীব কিনতু বেজায় ভালো মানুষ ছিলেন। সেদিন তার বাবা কমলের সাথে দেখা হওয়ার পরে আমাকেও কয়েকটি খেলনা কিনে দিয়েছিল। কমলও ঠিক যেন তার বাবার মতো উদার মন মানসিকতার একজন ভালো ছেলে । স্কুলের পাশেই ছিল তাদের বাসা। আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝে মাঝে ওদের বাসায় বেড়াতে যেতাম। কমলের মা তার নিজের সন্তানের মতো আমাদেরকে আদর যন্ত করতেন। কমলকে যা খাওয়াতেন আমাদেরকেও তা খাওয়াতেন। পূজো ছিল কমলের ভীষণ পছন্দ। কিন্তু এবার পূজোটা কমলের জন্য এক ভয়ানক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছে। ওর বাবা ঢাকায় একটা ট্রাক দূর্ঘটনা করে। সেই দূর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন চাপা পরে মারা যান। পাবলিক কমলের বাবাকে গণ- পিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে । কমলের মা তার বাবার মৃত্যু শোকে মানসিক রোগী হয়ে গেছেন। এবারের স্বরস্বতী পূজোর মেলায় সে একা একা মেলাতে এসেছেন। একদিকে বাবা হারা অন্য দিকে মা মানসিক রোগী। খালি হাতে সে মেলায় বেড়াতে এসেছে। কমলকে দেখলাম -সে শুধু সব দোকানে এদিক সেদিক ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কমলের এমন অবস্হা দেখে আমার মন হুহু করে কেঁদে উঠে। আমার বাবা-মা এখন কমলের সাথে মিশতে দেন না।প্রচন্ড ইচ্ছে থাকা শর্তেও মা-বাবার জন্য মিশতে পারিনি। সে এখন ভীষণ একা! ওর বাবা থাকলে আজ কতো কিছু ক্রয় করতে পারতো ও খেতে পারতো।
কমলের তো আর বাবা নেই। সে খালি হাতে এসে খালি মুখে সেদিন মেলা হতে ফিরে এসেছেন নিশ্চিত। কারন কারো কাছে সে চেয়ে নেওয়ার মতো ছেলে না।এটা তাদের জন্মগত অভ্যাস। যারা মানুষ কে দুহাত ভরে দেয় সেই হাত কখনো নিতে জানেনা।বাবার কড়া শাসনের জন্য দু’একবার আমি তাকে দেখেও না দেখার ভান করি। সে উদাস দৃষ্টিতে শুকনো মুখে আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল। তার তাকানোর ভঙ্গি দেখে মনেহচ্ছিল সে নতুন করে আমাকে চিনছে । গত পূজোর আমি ও এবারের পূজোর আমি’র মাঝে যে বিশাল ফারাক । দেখলাম আমার বাবার মুখের দিকে কমল বারংবার তাকাচ্ছে।
সে আমার বাবার মাঝে তার বাবার মুখের ছবি মেলাচ্ছিল । হতে পারে সহানুভূতি খুঁজছিল। পৃথিবীর সব বৃক্ষই যেমনি একই প্রজাতির হয়না। তেমনি পৃথিবীর সব বাবারা একই রকম হয়না। দিনের আলোয় আকাশের তারা হয়ে যাওয়া তার বাবাকে সে খুঁজে পাবে কোথায়?
বাবা আমাকে নিয়ে একটা বড়ো মাটির খেলনার দোকানে গেলেন। আমার পছন্দনীয় হরেকরকম খেলনা আমাকে ক্রয় করে দিলেন। কমল কে দূর থেকে দেখতে দেখতে পাচ্ছি সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কমল কে ডেকে বলতে ইচ্ছে করছে। কমল শোন পৃথিবী ভীষণ নিষ্ঠুর রে কারন কি জানিস?
বাবা আছে যার বাজারের সব খেলনা তার।
না! না! বলতে হবেনা সেই শিক্ষা অর্জন সে প্রাকৃতিক ভাবে হয়তো পেয়ে গেছে।

এই ধরনের আরও খবর

Advertising

আর্কাইভ

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন এখানে

জেলা প্রতিনিধি হতে যোগাযোগ করুন

সপ্তাহের সেরা ছবি

© All rights reserved © 2022 bongobazarpatrika.com
Theme Download From ThemesBazar.Com