কবিতা -শখের এক জোড়া জুতো
এই যে ছোট্ট খুকি,
একটু এদিকে এসো তো,”মা”
বাঃ তুমি দেখতে ভীষণ মিষ্টি !
তোমার নাম যেন কী ?
– স্যার, জরিনা।
আচ্ছা বেশ নাম তো
কোথায় যাচ্ছো ?
-“বুড়িমার জন্য ওষুধ কিনতে? ”
আচ্ছা!থাকো যেন কোথায়?
-ঐ যে কুড়িল বস্তিতে!
কী করা হয়?
স্কুল – টিস্কুল যাও কি?
-জরিনা মুচকি হাসি দিয়ে বলল, “না স্যার আমি একজন টোকাই, কাগজ কুড়াই।”
আহারে! কী শুনলাম।
বাবা- মা কী করেন?
– “জানিনা,স্যার। ”
এ আবার কেমন কথা রে, বাবা !
জানো-না বাবা মায়ের কথা।
– “শুনেছি জন্মের পরে ডাস্টবিনে আমাকে কুড়িয়ে পেয়েছেন,বুড়িমা? ”
ও তাই বুঝি। সরি! সরি!- ভেরি সরি, জরিনা
এতো আমি জানতাম না।
তাই মনে কষ্ট নিওনা।
আচ্ছা, তোমার বুড়িমা করে কী?
-“স্যার, আগে ভিক্ষা করতেন। এখন অসুস্থ। আমি কাগজ কুড়িয়ে যা পাই – তাই দিয়ে খাই।
আহারে! কী নিদারুণ কষ্ট
তা কাগজ কুড়িয়ে দিনে আসে কতো?
– ভাগ্য ভালো হলে ধরুন -এক হতে ডের শত ? কখনো বৃষ্টি বাদল দিনে যদি না পারি কাগজ কুড়াতে, সেদিন পাইনা খেতে।
শুনে হুহু করে কেঁদে উঠে মন-করি অশ্রু বিসর্জন।
হাতে কিছু গুজে দিয়ে টাকা-
ও আমার পায়ের শখের জুতো জোড়া – করিলাম সম্প্রদান।
সে তা পেয়ে মহাখুশি,
করিল গ্রহন দিয়ে মিষ্টি হাসি।
তারপর দিল এক ভৌ- “দৌড় ”
আমি ডাকলাম – জরিনা, এই জরিনা-এদিকে একটু শোন।
কে শুনে কার কথা?
দৌড়াচ্ছে সে – একহাতে টাকা,
ও অন্য হাতে নিয়ে জুতো জোড়া।
আওয়াজ আসিল কানে ভেসে –
বুড়িমা, আজ একজোড়া জুতা পেয়েছি তোমার তরে-
আমিও খুশি – মনে মনে হাসি,
ভেবে জরিনার বুড়িমার কথা –
জানিনা কতো দিন পরে জুটবে তার পায়ে জুতা জোড়া।
আমি না হয় কিনবো
আরেক নতুন জুতো জোড়া।
কিন্তু কিনতু কিনতে পারবে কি?
জরিনার মতো যারা।