জীবনের প্রথম নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেই দেশ সেরা হয়েছেন নাটোরের কৃতি সন্তান সুমাইয়া নাসরীন শামা। ১৪তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষা-২০২১ এর ফলাফলে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের (৩৯তম ব্যাচ) এর এই শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ পদে ১০২ জনকে মনোনীত করে ফল প্রকাশ করা হয়।
সুমাইয়া নাসরীন শামার গ্রামের বাড়ী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার লক্ষ্মীকোলে। বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলার প্রথম সারীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান, শিক্ষানুরাগী সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক মরহুর আব্দুল বারীর নাতনী শামা।
‘সাধারণ বীমা কর্পোরেশনে’র অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ ও বড়াইগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজনীন খাতুনের সন্তান শামা। এই দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে শামা দ্বিতীয়। বড় সন্তান সুরাইয়া তাসনিম আশা ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন আর সন্তান ছেলে মুহাম্মদ বিন আজাদ বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
সুমাইয়া নাসরীন শামা বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালের জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি ২০১৩ সালে বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে ২০১৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে ২০১৫-১৬ সেশনে রাবির আইন বিভাগে ভর্তি হন। তিনি অনার্সের মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হন। বর্তমানে তিনি আইন বিভাগে স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নরত।
শামা বলেন, ‘আমার এই ফলাফলের জন্য পরিবার ও আইন বিভাগের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। সত্যি বললে আমি প্রথম হবো এমনটা প্রত্যাশা ছিল না। আমার টার্গেট ছিল মেধাতালিকায় নাম এলেই হবে।’
প্রথমবার নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দেশ সেরা হওয়া এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘আমার কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। আমি বড় হয়ে এই হবো বা ওই হবো। সময় যখন যা ডিমান্ড করবে, তখন সেটাই করবো।’
জুডিশিয়ারি পরীক্ষা দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্লাসগুলো মনোযোগ সহকারে করার পরামর্শ দেন শামা।
রাবির আইন বিভাগের শিক্ষকমন্ডলী, শুভানুধ্যায়ী ও নিকট আত্মীয়দের নিকটে তাঁদের মেয়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন শামার বাবা-মা।
এ বিষয়ে রাবির আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, আজকের দিনটি আমাদের আইন বিভাগের জন্য অশেষ এক আনন্দ ও গর্বের দিন। ১৪তম বিজেএস পরীক্ষায় (সহকারী জজ) আমাদের বিভাগের ৩৯ ব্যাচের তিন শিক্ষার্থী সুমাইয়া নাসরিন শামা (১ম) , জান্নাতুন নাঈম মিতু (২য়) এবং ইশরাত জাহান আশা ( ৪র্থ) স্থান অর্জন করেছে।