হিমালয় দেখেছি আমি
হিমালয়ের শরীর বেয়ে চুঁড়ায় উঠতে চেয়েছি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে!
যেদিন চুঁড়ায় গিয়ে দাঁড়ালাম, দেখলাম;
সেখান থেকে পৃথিবীর সমতল মেঘময়!
চারদিকে কেবল ঘন কালো কুয়াচ্ছন্ন স্তব্ধতা।
ওখানে জিঘাংসার শব্দ নেই, বারুদের গন্ধ নেই, গারোদের কান্না নেই, কেবল দেখেছি অনন্তে অসীম আলিঙ্গন।
বুঝলাম, কতটা ক্ষুদ্র আমি, আমরা, আর এই বিস্তৃর্ণ দাম্ভিক লোকালয়।
হিমালয় বুক পেতে আছে বলেই ওখানে স্পর্শ করেনা বিধ্বংসী সাইক্লোন,
মহাপরাক্রমশালী সূর্যের দহন!
হিমালয়ের পাদদেশের বসতিরা যদি জানত, তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ ব্যাসার্ধ এবং উচ্চতা,
শামুকের খোলসের ভেতরে লুকিয়ে রাখতো বুকের অহম!
হিমালয় দেখেছি আমি!
সাগরের গর্জন শুনে ভেবেছিলাম, জগৎ সংসার সাগরময়!
যখন শুনেছিলাম মেঘের সাথে মেঘের ঘর্ষণে বিদ্যুৎ তৈরি হয়, ভয়ঙ্কর ঝলসে উঠে পৃথিবী,
শব্দের হুংকারে কেঁপে উঠে হৃদপিণ্ডের নির্জনতা,
তখন ভেবেছিলাম, এইতো বড়ো!
হিমালয়ের চুঁড়ায় উঠে বুঝলাম, সবাই চঞ্চল অস্থির,
কেবল বুকের অসীমতায় স্থির অচঞ্চল সে।
হিমালয় দেখেছি আমি!
তাইতো নিজের বুকের ভেতরে লুকিয়ে রাখি জিঘাংসার বেসরম তান্ডব!
পৃথিবীতে দেখেছি অনেক ভূকম্পন,
দেখেছি বারুদের আস্ফালন,
দেখেছি হিমালয়ের পাদপিঠের বসতি চুঁচোর গন্ধরা কেমন করে নৃত্য করে,
দেখিছি অর্বাচীন মানবেরা কেমন করে সাবল মারে হিমালয়ের গায়,
স্মিত হেসে অচঞ্চল স্থির দাঁড়িয়ে আছে অনন্ত কাল পৃথিবীর হিমালয়!
বুঝলাম, বড়’রা এমনই হয়!
হিমালয় দেখেছি আমি।