শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণাঃ
বহুল প্রচারিত বঙ্গবাজার পত্রিকায় আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে আজই যোগাযোগ করুন,এছাড়াও আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা, দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, ভালো খবর, জন্মদিনের শুভেচ্ছা, নির্বাচনি প্রচারণা, হারানো সংবাদ, প্রাপ্তি সংবাদ, সংর্বধনা, আপনার সন্তানের লেখা কবিতা, ছড়া,গান প্রকাশ করতে যোগাযোগ করুন। ❤️দেশ সেরা পত্রিকা হতে পারে আপনার সহযাত্রী ❤️

ভাবনার জানালা__(?) প্রসঙ্গঃ সীমাহীন অসঙ্গতি আমাদের চিন্তায় ও কর্মে! ফিরোজ উদদীন বাদল,লেখক,কবি,ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

  • বঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ প্রকাশিত রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২০০ বার পড়া হয়েছে

ভাবনার জানালা__________(?)
প্রসঙ্গঃ সীমাহীন অসঙ্গতি আমাদের চিন্তায় ও কর্মে!
ফিরোজ উদ্ দীন বাদল,
লেখক,কবি, ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
বিরোধী দলের অভিযোগ- শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসেছে জনগণকে দশ টাকা দামে চাল খাওয়াবে- এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কথাটা সত্য। এমন প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন। দেশে কৃষিক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনও তিনি এনেছেন।

অপরিকল্পিত আবাসন এবং ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের কারণে কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, সার- কীটনাশকের সহজলভ্যতা, উন্নত জাতের তথা উচ্চ ফলনশীল বীজের উদ্ভাবন, সেচ সুবিধার আধুনিকীকরণের মাধ্যমে দেশের খাদ্য উৎপাদন গত এক দশকে প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

কৃষি শ্রমিকের মজুরীও আগের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। যার কারণে আমাদের দেশে উৎপাদিত মোটা চাল সর্বোচ্চ চল্লিশ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তথাপি, শেখ হাসিনা জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা মাথায় রেখে খোলাবাজারে টিসিবির মাধ্যমে ত্রিশ টাকা দরে চাউল বিক্রি করছেন। এক কোটির অধিক পরিবারকে মাসিক ত্রিশ কেজি হারে দশ টাকা মূল্যে চাল বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।

যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম- শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি কিংবা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু, শেখ হাসিনার সরকার এই মুহূর্তে ক্ষমতা থেকে সরে গেলে বর্তমান বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতিতে অন্য কোনো দল যদি ক্ষমতা গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে তাদের পক্ষে জনগণকে দশ টাকা দামে চাল খাওয়ানো আদৌ সম্ভব হবে কি?

তবে হ্যাঁ, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণের ভোটে সরকার পরিবর্তন হওয়া নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা হতেই পারে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন- সংগ্রাম গণতান্ত্রিক কর্মসূচিরই অংশ। জনগণের কল্যানে, জনগণকে আকৃষ্ট করার প্রয়োজনে, দলীয় কৌশলের অংশ হিসেবে বিরোধী দল জনগণের সামনে নিত্যনতুন কর্মসূচি নিয়ে হাজির হতেই পারে। কিন্তু অবাস্তব, অবান্তর, কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও আখেরে তাদের জনরোষের মুখে পড়তে হয়। ইতিহাসে এর প্রমাণ ভুরি ভুরি।

যে কথাটি বলার জন্য এতো লম্বা কথার অবতারণা- সেটি হচ্ছে, শুধুমাত্র চাল খেয়ে মানুষ বাঁচেনা। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নির্বাহে আরো অনেক কিছুরই প্রয়োজন। এর মধ্যে চাউলের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ধরে নিলাম, একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৭০০ টাকা। চার জনের পরিবার। দৈনিক চাউল লাগে দেড় কেজি। নূন্যতম ৬০/৭০ টাকার চাউল। কিন্তু, তার সিগারেট লাগে, পান লাগে, মাছ লাগে, মাংস লাগে, সবজি লাগে, তেল- মসল্লা লাগে, ঔষধ- পত্র লাগে, অনেকের বাসাভাড়া লাগে, টিভির ডিস ভাড়া লাগে, বাচ্চাদের স্কুলের বেতন- শিক্ষা উপকরণ লাগে, তেল সাবান লাগে, লাগে আনুষঙ্গিক আরো কতো কী! এতে খরচ হয় অনেক। বস্তুত, মধ্যবিত্ত সহ নিম্ন আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। অন্যদিকে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক বেড়েছে- এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

দৈনিক তিন প্যাকেট বেনসন এন্ড হেজেস সিগারেট খাওয়ার লোকের এদেশে অভাব নেই। আঠারো’শ টাকা কেজির ইলিশের বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। অফিস- আদালত, শপিং মলে দামী পারফিউমের গন্ধ। দামী হোটেলের রেস্টুরেন্ট- বারে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। কোনো কোনো পরিবারে রয়েছে দু’ চারটা গাড়ি।

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রাম অধুনা শহরের রূপ পরিগ্রহ করেছে। রাস্তার দু’ধারে গড়ে উঠছে অট্টালিকার সারি। জীবন যাত্রার মান বেড়েছে। বেড়েছে নাগরিক সুবিধা। শতভাগ বিদ্যুতায়িত প্রায় প্রতিটি উপজেলা।

উচ্চশিক্ষা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা এখন জনগণের দোরগোড়ায়। রাঙ্গামাটি, কক্সবাজারের পরিবর্তে এদেশের বিত্তবান মানুষ এখন বেড়াতে যায় সিঙ্গাপুর- মালয়েশিয়ায়। উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে লাখো মানুষের ভীড় কোলকাতা- ব্যাংককের হাসপাতালগুলোতে। উচ্চশিক্ষার জন্য হাজারো ছেলে ফাঁড়ি জমাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডায়।

উন্নয়নশীল দেশের তকমা বাংলাদেশের গলায়। নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতুর দেশের নাম বাংলাদেশ। ঢাকা শহরে চলছে মেট্টোরেল। কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল। রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্র আমাদেরই দেশে। এশিয়ার বৃহত্তম শিল্পনগরী প্রায় দৃশ্যমান মীরসরাইয়ে। গড়ে উঠছে আরো শতাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল। উন্নত বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন বাংলাদেশ। আরো কতো চোখধাঁধানো মেঘা প্রকল্পের কাজ চলছে, এ দেশেই। গড়ে উঠছে নিত্যনতুন যোগাযোগ অবকাঠামো।
পাদটীকাঃ এদেশের ভিখারি এখন মুষ্টি চাল ভিক্ষা নেয় না। আসলে চাল তথা খাবারের অভাব এখানে মুখ্য নয়। উন্নত জীবনের স্বপ্ন মানুষের চোখেমুখে। আছে হাজারো সমস্যা। সেসাথে খোলা রয়েছে সম্ভাবনার শত দুয়ার। সেহেতু, সস্তা রাজনীতি- মানুষকে বিভ্রান্ত করার অশুভ প্রয়াস বন্ধ হওয়া সমীচীন। সময়োপযোগী এবং গঠনমূলক রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিরোধী দলের এগিয়ে আসা উচিৎ। এতেই জনগণ সাড়া দেবে। মানুষ ভালো- মন্দ বিচারে সক্ষম।

এই ধরনের আরও খবর

Advertising

আর্কাইভ

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন এখানে

জেলা প্রতিনিধি হতে যোগাযোগ করুন

সপ্তাহের সেরা ছবি

© All rights reserved © 2022 bongobazarpatrika.com
Theme Download From ThemesBazar.Com