সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণাঃ
বহুল প্রচারিত বঙ্গবাজার পত্রিকায় আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে আজই যোগাযোগ করুন,এছাড়াও আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা, দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, ভালো খবর, জন্মদিনের শুভেচ্ছা, নির্বাচনি প্রচারণা, হারানো সংবাদ, প্রাপ্তি সংবাদ, সংর্বধনা, আপনার সন্তানের লেখা কবিতা, ছড়া,গান প্রকাশ করতে যোগাযোগ করুন। ❤️দেশ সেরা পত্রিকা হতে পারে আপনার সহযাত্রী ❤️

মোস্তাক ডালিমেরা এখনও ছদ্মনামে জীবন্ত

  • বঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ প্রকাশিত বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০২২
  • ২১৫ বার পড়া হয়েছে

দলীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লষন করতে গিয়ে বাংলা দেশের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু দাপুটে নেতার নীতি নৈতিকতা,  স্বার্থপরতা,মুনাফেকী,ভন্ডামীর  চিত্র বিশ্লেষনে  রিতিমতো হতবাক হতে হয়।।

প্রেসিডেন্ট এরশাদের কাছে রাজনীতিবিদদের চাইতে আমলারাই ছিল অনেক বেশী বিশ্বস্ত।তার শাসনামলের প্রায় পুরোটাই সে সামরিক বেসামরিক আমলাদের উপর নির্ভরশীল ছিল।

১৯৯০সালের ৬ডিসেম্বার এরশাদ সাহেব পদত্যাগের পূর্বে তার একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত সেনাপ্রধান নুর উদ্দীন খানের সহযোগীতা চাহিলে  ঐ সেনা প্রধান তাকে সরি স্যার বলে কেটে পড়েন।

এরশাদের সুসময়ের সার্বক্ষনিক সঙ্গী ওপ্রিয় পাত্র দুই আমলা যথাক্রমে এম, কে আনোয়ার ও কেরামত আলী তার দূঃসময়ে এক মূহুর্তের জন্যও পাশে থাকেনি।অথচ ঐ আনোয়ারই ছিল তার মন্রী পরিষদ সচীব।যিনি সাহাবুদ্দীন সাহেব কে অস্হায়ী রাষ্ট্রপতির শপথ পাঠ করিয়েছেন।

বলে রাখা প্রয়োজন যে, এরশাদের পতনের পর সন্মিলিত ছাত্রঐক্য পরিষদ এরশাদের দালাল চাটুকারদের যে তালিকা তৈরী করেছিল তাতে আমলাদের মধ্যে প্রথম নামটি ছিল এম, কে আনোয়ারের আর দ্বিতীয় নামটি ছিল কেরামত আলীর।অথচ নির্মম সত্য হল এরশাদের দূর্দিনে এদের কেউ এরশাদের পাশে থাকেনি।এতটুকু সহানুভূতি জানায়নি।

চাটুকার শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এরশাদের একনিষ্ঠ জনদের একজন ছিল।এরশাদের মায়ের মৃত্যুতে মোয়াজ্জেম সাহেব এত বেশী আঘাত পেয়েছিলেন যে তার কান্নায় আকাশ বাতাস স্হবির হয়ে পড়েছিল।তার এরূপ কান্না দেখে অনেকে সেদিন বিভ্রান্ত হয়েছিল এই মর্মে যে,আসলে মা টা কি এরশাদের না মোয়াজ্জেমের?

অথচ সত্যিটা হল, এই মোয়াজ্জেম এরশাদের দূঃসহ বেদনার দিনের সঙ্গী না হয়ে মূহুর্তে জার্সিটা বদলে ফেললেন।মাস না পেরুতে  এম, কে আনোয়ার যোগ দিলেন বি,এন, পিতে।দূর্দিনে পাশে থাকেনি মিজানুর রহমান, মওদুদ সাহেবেরা বরং এরশাদ যখন চরম আইনী সংকটে নিপতিত হল তখন মওদুদ সাহেব বি,এন,পি জামাত জোট সরকারের আইন মন্ত্রী।

অনুরূপ ভাবে খালেদা জিয়ার আজকের এইদূর্দিন, দূঃসময়ে যাদের উপর একটু খোঁজ খবর নেয়ার, সহযোগীতা,সহানুভূতি  প্রদর্শন করা  কিংবা দলীয় ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে একাত্ন থাকার কথা তাদের অনেকের টিকিটিও  আজ আর খু্জে পাওয়া যায় না।
কারনে অকারনে,যে ফালু মিয়া খালেদা জিয়ার পাশে ছায়া হয়ে থাকতো,যার পদ পদবী,বিত্ত বৈভব,যশ কীর্তি,সুনাম সুখ্যাতি সহায় সম্পদ, অর্থবৃত্ত সবই খালেূা জিয়ার করুণা বা বদান্যতা সেই ফালু আজ দূর পরবাসে।দুঃসময়ে একদন্ডও খালেদার পাশে আসেনি।

বি,এনপির শাসনামলের আরেক ক্ষমতাধর ব্যাক্তির নাম হারিছ চৌধূরী।খালেদা জিয়ার কার্য্যালয়ের অনেকেই যার ভয়ে তটস্হ থাকতো।ওয়ান ইলেভেনে খালেদাকে রেখে দেশান্তরী হওয়ার পর খালেদার অসুস্হতা কিংবা কারাবাস নিয়ে একটিবারও খোঁজ খবর নেয়ার সময় পায়নি।

খালেদার দুই মেয়াদের বিশ্বস্ত ওনির্ভরযোগ্য আমলা ডঃ কামাল সিদ্দিকী  ছিলেন প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়ার সচীব, মুখ্য সচীব, ওমন্ত্রী পরিষদ সচীব।অথচ ক্ষমতার পালা বদল হতে না হতে  রোজ রোজ চক চকে ব্লেডে দাঁড়ি কেটে মুখে মসৃনতা এনে বিদেশের মাটিতে আয়েশী জীবন পার করছে।

এটাই হল আমলা চাটুকারদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট। স্বাধীনতা উত্তর কালের  রাজনীতিতে মোস্তাক ডালিমেরাও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যতুল্য আনুকুল্য, স্নেহাদর পেয়েছিল।কেননা ডালিমের স্ত্রী নিম্মি ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহেনার সহপাঠী।ঐ সুবাদে  নিম্মি স্বামী ডালিম ও শাশুড়ীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়ীতে যেতেন।বেগম মুজিব পরম মমতায় তাদের আদর আপ্যায়ন করতেন।ডালিম বেগম মুজিবকে মা বলেই ডাকতেন।সন্তানতুল্য ডালিমকে তাই বেগম মুজিব পুত্রবৎ স্নেহ করতেন।

অথচ ইতিহাসের জঘন্য নির্মমতার সাথে, ঐ ডালিমও সম্পৃক্ত হয়ে ১৫ আগষ্ট কালো রজনীতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকরার ঘৃণ্যতম কর্মকান্ডেঅংশ নিয়েছিল।

যে মায়ের আদরে আপ্যায়নে আর পুত্রসম মমতায় যে কিনা তার পরলোকগত মায়ের শূন্যতা বা অভাব পূরণ করতো   তবে কেমন করে তার সম্ভব হল ঐ মায়ের বুকে গুলি চালাতে।

বস্তুত এরাই ইতিহাসের কুলাঙ্গার সন্তান।একটিবারও কি তার মনে পড়েনি  মমতা ময়ী মায়ের নিঃস্বার্থ আদর মমতা ভালবাসার কথা?এতটুকু মানবতা ঐ কুলাঙ্গারের বিবেকে ঠাঁই পায়নি সেদিন।

৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে খোন্দকার মোশতাকের  বিপরিতে অন্য দলের প্রার্থীছিল প্রকৌশলী রশিদ সাহেব।এলাকায় তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী।মেশতাক ছিল অজনপ্রিয়।মোশতাক নির্বাচনে পরাজয় আঁছ করতে পেরে বঙ্গবন্ধুর সাহায্য চাইলে তিনি তার পক্ষে জনগণের কাছে ভোট চাইলেন।অবশেষে ভোট হল।নৌকার গণ জোয়ারের সেই যুগেও  মাত্র ৭০০ ভোটে মোশতাক জয়লাভ করেছিল।তাও বিলম্বে ঘোষিত ফলাফলে।

সে নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু যদি তার নির্বাচনী জনসভায় অংশ না নিত তাহলে রশিদ সাহেবের সাথে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হত।
এপ্রসঙ্গে কেউ একজন  বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাস করেছিলেন, লিডার এই আসনে হেরে গেলে কি দলের ক্ষতি হত?
বঙ্গবন্ধু সহাস্যে উত্তর দিলেন সে আমার পুরাতন সহকর্মী।

বঙ্গবন্ধু যে অজনপ্রিয় সহকর্মীটাকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার জন্য এতটুকু ত্যাগ স্বীকার করলেন  সেই সহকর্মীটিই একদা বাংলার মুকুটহীন সম্রাট,জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার নীলনকশা প্রনয়ন ওবিশ্বাসঘাতকতা করলেন।

আজকে আবার সময় হয়েছে একথাগুলো স্মরন করার। কেননা ডালিম মোস্তাকেরাও প্রকাশ্য আচরনে  অনেক আন্তরিক ওবিশ্বস্ততার পরিচয় বহন করতো।তাই নজরদারী বাড়াতে হবে আগাছা, পরগাছা,স্বার্থান্বেষী,সুবিধাবাদীদের উপর।চিনে নিতে হবে অতি তোষামোদ কারীদের। চিহ্নিত করতে হবে অতি উৎসাহীদের। সাবধান করতে হবে অতি কথনের মহা নায়কদের।
কেননা মোস্তাক ডালিমেরা লুকিয়ে আছে, নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

মসলেহ উদ্দীন চৌধুরী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ও সমাজকর্মী, সাবেক ভিপি, নিজামপুর কলেজ।

এই ধরনের আরও খবর

Advertising

আর্কাইভ

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন এখানে

জেলা প্রতিনিধি হতে যোগাযোগ করুন

সপ্তাহের সেরা ছবি

© All rights reserved © 2022 bongobazarpatrika.com
Theme Download From ThemesBazar.Com