মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাটে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার করে র্যাব-৭ সদস্যদের পিটুনি দিয়ে ছিনিয়ে নেয়া দ্বিতীয় পিস্তলটির সন্ধান মিলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পুলিশের কাছে আসা এক টেলিফোনে।
সঙ্গে পাওয়া গেছে ‘অনুশোচনা’মূলক একটি চিরকূট। গতকাল রোববার মীরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার জামালপুর এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পিস্তলটি উদ্ধার করা হয় বলে জোরারগঞ্জ থানার ওসি নূর হোসেন মামুন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শনিবার বারইয়ারহাট পৌর সদর ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে র্যাব-৭ সদস্যদের উপস্থিতিতে সভা করেছিলাম। সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রটি কোথাও রেখে যাওয়া না হলে কিংবা বুঝিয়ে না দিলে ‘কঠিন অ্যাকশনে’ যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম। এরপর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি একটি টেলিটক নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে জানান, তিনি সাউথ আফ্রিকা থেকে বলছেন। তাকে একজন জানিয়েছে, র্যাব-৭ এর খোয়া যাওয়া অস্ত্রটি জামালপুর এলাকার হাসা বাবুল নামে এক ব্যক্তির বাড়ির গেটের পূর্ব পাশের পিলারের সঙ্গে রাখা আছে। টেলিফোন পেয়ে একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বর্ণিত স্থানে অস্ত্রটি পায়।
ওসি বলেন, অস্ত্রের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। সেখানে লেখা আছে, ঘটনার সময় এক ব্যক্তি র্যাব-৭ সদস্যের হাতে আঘাত করলে অস্ত্রটি পড়ে যায় এবং তিনি সেটা নিয়ে চলে গেলেও ভয়ে পুলিশের কাছে জমা দেননি। এজন্য নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তিনি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে অস্ত্রটি র্যাব-৭ এর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
মীরসরাই প্রতিনিধি জানান, ২৫ মে সন্ধ্যায় মাদক উদ্ধারে মীরসরাইয়ে অভিযানে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা ডাকাত আখ্যা দিয়ে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব-৭ সদস্যদের ওপর হামলা করে। এতে র্যাব-৭ এর দুই সদস্যসহ তিনজন আহত হন। এ সময় ছিনতাই হয়ে যাওয়া দুটি অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে একটি অস্ত্র উদ্ধার হলেও অপরটি নিয়ে সংকটে পড়ে র্যাব-৭।
এর আগে শুক্রবার র্যাব-৭ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই হামলার ঘটনায় বারইয়ারহাট ও ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার এবং ছিনিয়ে নেওয়া একটি অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানানো হয়। ‘মাদক কারবারিরা’ এ ঘটনা ঘটিয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে র্যাব-৭ জানায়, জোরারগঞ্জ থানার ধুমঘাট এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কিছু মাদক কারবারির অবস্থানের খবর পেয়ে অভিযানে নামে বাহিনী। র্যাব-৭ এর উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যায় মাদক ব্যবসায়ীরা। তারা র্যাব-৭ সদস্যদের গাড়িটি ব্যারিকেডে আটকে দেয়ার চেষ্টা করে। সেটি করতে না পেরে বারইয়ারহাট বাজারে ফুট ওভারব্রিজের নিচে দুটি কাভার্ড ভ্যান দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে ‘ডাকাত ডাকাত’ চিৎকার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।