লজ্জা
© বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস
*********************
“লজ্জা নারীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভূষণ!”
প্রচলিত এ তাৎপর্যপূর্ণ কথা
বলেছেন যত প্রজ্ঞাবান মাথা!
অটুট অক্ষুণ্ণ থাকে যদি এ অমিয় ভূষণ
ঘুণাক্ষরে কোনোক্রমে যদি না ঘটে দূষণ
নিরন্তর থাকে জাজ্জ্বল্যমান
চারিত্রিক আকাশের পূষণ!
এই শব্দটা শুধু নারীকুলে নয়কো প্রযোজ্য
সমস্ত মানবের তরেই এ আবরণ অপরিহার্য!
লজ্জা এক অমূল্য আবরণ
সবার মনেই করে বিচরণ!
লজ্জার ধার ধারে নাকো পশুপাখি কীটপতঙ্গ
সে অনুভূতির নেইকো বালাই সদা থাকে উলঙ্গ!
লজ্জাহীন জীবন যাপন করে সব বন্য জীবজন্তু ;
লজ্জাবিহীন জীবনচক্রে রাজে হিংস্রতা অধিকন্তু!
মনুষ্যকুলেও নির্লজ্জ মানুষের নেই কিন্তু অভাব,
মনুষ্যত্বশূন্য অমানবিক জীবন যাপন যাদের স্বভাব!
লজ্জা নেই উৎকোচ লিপ্সুর, লজ্জা নেই বাহুবলীর,
লজ্জা নেই ক্ষমতা লোভীর আর যত প্রভাবশালীর!
ন্যায়নীতি আর শিষ্টাচারের ধারে নাকো ধার যারা
এগুলোর ধারকদের দুর্বল ভীরু আখ্যা দেয় তারা!
বেআব্রু শব্দটা নেইকো তাদের অভিধানে
নিত্য তাদের মনে বাঁধে বাসা মিথ্যা প্রণিধানে!
মনে প্রাণে পাশবিক আচরণে লিপ্ত সদা থাকে;
প্রতারণা প্রবঞ্চনায় নিরীহকে ফেলে দুর্বিপাকে!
বেআব্রু মানুষ নির্লজ্জ পশু আর এক,
দোঁহার মাঝে দেখি না কোনো ফারাক,
নিরন্তর খুঁজে মরে মানুষের মাঝে ফাঁক!
অবনীর ‘পরে যাদের নেই কোনো লজ্জা,
মনুষ্যত্বহীন আচরণ তারা নিত্য করে কব্জা!
শব্দার্থঃ ১) পূষণ = সূর্য
২) বেআব্রু= সম্ভ্রমহীন/লজ্জাহীন
৩)লিপ্সু =পেতে তীব্র বাসনা যার
৪) উৎকোচ = অবৈধ অর্থ / ঘুষ
রচনাঃ রবিবার রাত্রি, ১১ টা!
২৮ এ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ,
১২ ই জুন, ২০২২ ইংরেজি,
মাচানতলা, বাঁকুড়া।