লাইফস্টাইল ডেস্কঃ মধুর সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খালি পেটে খাওয়া জনপ্রিয় লোকজ চিকিৎসা। এটি নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা থেকে শুরু করে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে, আমাদের সমাজে এমন বিশ্বাস রয়েছে।
মধু ও রসুনের শক্তি
মধু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি গলাব্যথা প্রশমিত করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া এটি প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
রসুন শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এটি অ্যালিসিনসমৃদ্ধ একটি যৌগ, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখা, রক্তচাপ কমানো এবং সামগ্রিকভাবে হৃদ্রোগে সহায়তা করে। রসুনে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
মধু ও রসুনের সংমিশ্রণ
মধু ও রসুন একত্র হলে স্বাস্থ্য উপকারগুলো বাড়িয়ে তুলতে পারে। মধুর মিষ্টি রসুনের স্বাদ আরও
সুস্বাদু করে।
মধু-রসুন টনিকের রেসিপি
১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম তাজা রসুন খোসা ছাড়িয়ে হালকাভাবে ছেঁচে ৪০০ মিলিলিটার বা দুই কাপ মধুতে মিশিয়ে একটি কাচের বয়ামে ৬০ দিনের জন্য রেখে দিন। ৬০ দিন পর রসুনগুলো মধু শুষে রং বদলে গেলে খাওয়া শুরু করুন। প্রতিদিন রসুনের দুটি কোষ খাবেন। মধুও খাওয়া যাবে, তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের মধু খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
উপকার
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়বেঃ নিয়মিত মধু ও রসুন সেবনে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এটি মৌসুমি জ্বর, সর্দি এবং অন্যান্য সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করবে।
প্রদাহ কমাবেঃ প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে বলে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বা জয়েন্টের ব্যথার উপশম করবে রসুন ও মধুর এই মিশ্রণ।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করবেঃ রসুন হজমে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মধুর সঙ্গে রসুন মিলিত হয়ে প্রোবায়োটিকে রূপান্তরিত হলে এই মিশ্রণ পাচনতন্ত্র শক্তিশালী করতে পারে।
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখেঃ রক্তচাপ কমাতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রসুনের উপকারী দিকগুলো হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে যাঁদের কষ্ট হয়, রসুন ও মধু খেলে তাঁদের অস্বস্তি কমবে।
বর্ধিত শক্তির মাত্রাঃ মধু শর্করার প্রাকৃতিক উৎস। দ্রুত শক্তি বাড়াতে এর জুড়ি নেই। তার সঙ্গে রসুনের গুণ যুক্ত হলে এটি হয়ে যায় প্রাকৃতিক টনিক। এটি যৌনজীবনে শক্তি সঞ্চার করে এবং শুক্রাণু বাড়ায়।
রসুন ও মধু ৬০ দিন একসঙ্গে রাখলে ফার্মেন্টেড হয়ে যায়। এটি অন্ত্রের জন্য উপকারী। ৬০ দিনের বেশি রাখতে পারলে তার ঔষধি গুণ আরও বাড়বে।
সতর্কতাঃ
প্রতিদিন রসুনের দুটি কোষ ও এক টেবিল চামচের বেশি মধু খাওয়া ঠিক নয়। রসুনে অ্যালার্জি থাকলে রসুন-মধুতে সমস্যা হতে পারে। তাই অ্যালার্জি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
রসুনের রক্ত পাতলা করার প্রাকৃতিক গুণ রয়েছে। যাঁরা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান বা নিজের শারীরিক অপারেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁরা রসুন ও মধু খাবেন না। অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিইআরডি থাকলে রসুন-মধুর টনিক না খাওয়া ভালো। তাতেএটি বাড়তে পারে।
লেখকঃ আলমগীর আলম