বাংলাদেশের ইতিহাসে, আধুনিক-উন্নততর বাংলাদেশ বিনির্মাণের মহাযাত্রা পথে আজ ২৮ সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক দিন। আজ প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন। এদিনে তিনি স্পর্শ করেছেন ত্যাগ, সংগ্রাম ও অর্জনের ঘটনাবহুল ৭৫ বছর।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী-বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তুনি রাষ্ট্রনায়ক থেকে নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বনেতার কাতারে আর বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে উন্নীত করেছেন মর্যাদার আসনে।
চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে। বিশ্বের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ এখন একটি রোল মডেল। বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন বিশ্বনেতাদের। মিয়ানমারে জাতিগত নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত।
আজ দেশবাসীর মতো সারা বিশ্ব বিশ্বাস করে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই করোনা মহামারীর পরও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সব দেশের ওপরে। মানুষের জন্য আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা, সঠিক নেতৃত্ব, সময়োচিত পদক্ষেপ, অর্থনীতিকে বাঁচাতে প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন করে দেশের মানুষকে করেছেন ক্ষুধামুক্ত। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ-এতসব অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলেই হয়েছে।
জননেত্রী অর্জনের তালিকায় আরো আছে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৪ বছর ৪ মাসে উন্নীত, যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সাক্ষরতার হার ৭৫.৬০ শতাংশে উন্নীত করা। বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ধর্মীয় শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আনন্দঘন পরিবেশে অনাড়ম্বরভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়েছে। আজ বেলা ১১.৩০ টায় উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের কেক কাটা ও বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
আমরা প্রত্যাশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ, সুযোগ্য ও কুশলী নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দৃঢ়প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে উন্নয়নে স্বর্ণশিখরে। প্রতিরোধ করবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ক্ষুধা, দারিদ্র, অন্ধকার ও পশ্চাৎপদতার। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পূর্ণ বাস্তবায়নের বহুমুখী কর্মযজ্ঞে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারও তাঁর সর্বক্ষণের সহযাত্রী।