ঢাকা: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া আরও ১০ সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্র-জনতা গণহত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করা নিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আছাদুজ্জামান খান কামালকে বর্ণনা করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক সদস্য।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের পর এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করছেন নেটিজেন। তারা বলছেন, কতটা নৃশংস আর নির্দয় হলে এমন তাচ্ছিল্যের সঙ্গে মানুষ হত্যা নিয়ে আলাপ করতে পারে!
ডিএমপির যে সদস্য হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করছিলেন ভিডিওতে ওই পুলিশ সদস্যের নেমপ্লেটে নাম দেখা গেছে ইকবাল। আর আসাদুজ্জামান খান কামালের বাম পাশে যিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি বর্তমান স্বরাষ্ট্র সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
৪৩ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের সামনে ইকবাল সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মোবাইল ফোন থেকে একটি ভিডিও দেখাচ্ছেন।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের ৪ তারিখ পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়।
ভিডিওতে পুলিশ কর্মকর্তার কথা শুনে বোঝা যায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিতে হতাহতদের একটি ভিডিও আসাদুজ্জামানকে দেখানো হচ্ছে।
ভিডিও ক্লিপটি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাঁধের পেছন থেকে মোবাইল ফোন থেকে ধারণ করা হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের পুলিশ গুলি করেও দমাতে পারছে না বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা ইকবাল। গুলি করার ভিডিও দেখাতে দেখাতে তিনি সাবেক মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।’
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বিকারভাবে মনোযোগ দিয়ে ভিডিওটি দেখেন। গুলি ও নিহতের দৃশ্য দেখে তার চেহারায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।