নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর হাতিয়ার সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই সদস্য প্রার্থীর দুজন প্রস্তাবকারী ও একজন সমর্থনকারীকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকালে জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানবন্ধন করেছে ভুক্তভোগী প্রার্থী ও সাধারণ জনগণ। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ও গতকাল বুধবার দুই প্রার্থী জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন একাধিক প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ১নং হরণী ও ২নং চানন্দী ইউনিয়নের গত ২৫ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থীরা হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করার কথা থাকলেও বর্তমান এমপি মোহাম্মদ আলী সমর্থিত সন্ত্রাসীদের কারণে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারে নাই। পরবর্তীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক জেলা ও সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রার্থীদের মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দান করেন। এরপর বিভিন্ন অঞ্চলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের, প্রস্তাবকারীদের, সমর্থনকারীদের বাড়ি বাড়ি হামলা হামলা ও হুমকি প্রদান করে এবং জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। এছাড়াও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা ১নং হরণী ইউনিয়নের দুই সদস্য প্রার্থীর দুজন প্রস্তাবকারী ও একজন সমর্থনকারীকে তুলে নিয়ে যায়। বর্তমানে তফসিলকৃত দুটি ইউনিয়নে ভোটাররা আতঙ্কিত অবস্থায় আছে। নির্বাচনী প্রচারণার ব্যাপারে কমিশনের সিদ্ধান্ত না থাকলেও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর প্রার্থীগণ সকল ধরনের প্রচার প্রচারণা করে যাচ্ছে। অপরদিকে আমাদের প্রার্থীগণকে হুমকি দিয়ে আসছে আমরা প্রার্থীরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। এ সময় প্রার্থীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা সমান সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিবার হাতিয়ার সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নোয়াখালী ৬ আসনের সাংসদ ও মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন,এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বানোয়াট। যারা এসব অভিযোগ করছে তারা এলাকায় আসেনা। জেলা শহরে বসে বসে একজন প্রাক্তন সাংসদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। তারা কার এজেন্ডা বাস্তাবায়নের জন্য এসব করছে, তা তিনি সাংবাদিকদের খতিয়ে দেখার আহ্বান করেন।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন জানান, দুই প্রার্থী জানিয়েছে তাদের প্রার্থীর নাম প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগকারীদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।